একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণী অভিনেতা ও নাট্যকার মাসুম আজিজ (৭০) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
তার মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে তার ছেলে অভিনেতা উৎস জামান।
গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ‘লাইফ সাপোর্টে’ ছিলেন মাসুম আজিজ। ক্যান্সার ও হৃদ্রোগে ভুগছিলেন তিনি। এ বছরের ২ জানুয়ারি তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। তখন থেকে স্কয়ার হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
ক্যান্সারের প্রথম ক্যামো এ হাসপতালে দেওয়া হয়। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় ক্যামোর দ্বিতীয় পর্বে এসে।
উৎস জামান বলেন, এ বছরের শুরুতে বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ে। প্রথম ক্যামো ঠিকভাবেই সম্পন্ন হয় কিন্তু দ্বিতীয় ক্যামো যখন শুরু হয় তখন বাবার শরীর এটা নিতে পারছিলো না। এরপর গত মাসের ২৪ তারিখে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেদিনই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসায় কিছুটা উন্নতি হলে তাকে আমরা বাসায় নিয়ে আসি। চারদিন বাসায় থাকার পর তার শারীরিক খারাপ হলে আবার হাসপাতালে নেই। আইসিইউতে চিকিৎসা হচ্ছিল বাবার।
মাসুম আজিজের ছেলে উৎস জামান জানান, আজ সোমবার (১৭ অক্টোবর) তার বাবার মরদেহ হাসপাতালেই থাকবে। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) অভিনেতার মরদেহ নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে রাষ্ট্রীয় ও সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে পাবনায় গ্রামের বাড়িতে। সেখানেই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
মাসুম আজিজ চিত্রনাট্যকার ও নাট্যনির্মাতা হিসেবে বেশ পরিচিত। মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের খ্যাতি রয়েছে তার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন তিনি থিয়েটারে কাজের মাধ্যমে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম টিভি নাটকে অভিনয় করেন।
মঞ্চ, টিভি নাটক ও সিনেমা সবখানেই অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছেন মাসুম আজিজ। আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে তিনি টিভিতে কাজ করছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাটক হলো- ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’, ‘সাকিন সারিসুরি’, ‘তিন গ্যাদা’, ‘দুই দুকুনে চার’ ইত্যাদি।
বহু সিনেমায়ও অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন মাসুম আজিজ। ‘ঘানি’ সিনেমায় অভিনয় করে ২০০৬ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া চলতি বছর তাকে একুশে পদকে ভূষিত করেছে সরকার।