অবৈধ অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে বিতাড়নের জন্য সামরিক বিমানের ব্যবহার আপাতত বন্ধ করল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। গত ১ মার্চ অবৈধবাসীদের নিয়ে একটি সামরিক বিমান রওনা দিয়েছিল আমেরিকা থেকে। তার পর থেকে পেন্টাগনের আর কোনও বিমান অবৈধবাসীদের ফেরত পাঠানোর কাজে ব্যবহার হয়নি। এই সংক্রান্ত বিষয়ে আপাতত কোনও সামরিক বিমানের পূর্বনির্ধারিত সূচিও নেই। আধিকারিক সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ জানিয়েছে, সামরিক বিমানে অবৈধবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া খরচ সাপেক্ষ হওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে বিতাড়নে উদ্যোগী হন ট্রাম্প। আমেরিকার সামরিক বিমান সি-১৭ (গ্লোবমাস্টার) এবং সি-১৩০ ব্যবহার করে ভারত, গুয়েতেমালা, ইকুয়েডর, পেরু, হন্ডুরাস-সহ বিভিন্ন দেশে অবৈধবাসীদের ফেরত পাঠিয়েছে ট্রাম্পের প্রশাসন। এর মধ্যে বেশ কিছু দেশে সামরিক বিমান পাঠানোয় তুলনামূলক বেশি খরচ হয়েছে আমেরিকার।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ওই সামরিক বিমানে চাপিয়ে এক এক জন অবৈধবাসীকে আমেরিকা থেকে গুয়াতেমালায় পাঠানোর জন্য ট্রাম্প প্রশাসনকে গুনতে হয়েছে ৪,৬৭৫ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় চার লক্ষ টাকা। যেখানে বাণিজ্যিক বিমানে আমেরিকা থেকে গুয়াতেমালায় ওই একই পথে এক এক জন অবৈধবাসীকে পাঠাতে খরচ পড়ত ৮৫৩ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৪ হাজার টাকা।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগেও আমেরিকা থেকে অবৈধবাসীদের বিভিন্ন সময়ে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। অতীতে সাধারণত অবৈধবাসীদের বাণিজ্যিক চার্টার বিমানে নিজেদের দেশে পাঠিয়েছে আমেরিকা। জো বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন অবৈধবাসীদের নিয়ে মার্কিন চার্টার বিমান এসেছে ভারতেও। ওই বিমানগুলির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে আমেরিকার শুল্ক এবং অভিবাসন দফতর (আইসিই)। কিন্তু দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে ট্রাম্প সেই পথে হাঁটেননি।
ট্রাম্প প্রথমে সামরিক বিমানে বিভিন্ন দেশের অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু করলেও এতে বেশ কিছু সমস্যা দেখা যায়। তার মধ্যে অন্যতম হল সি-১৭ গ্লোবমাস্টার বিমানের যাত্রাপথ। এই সামরিক বিমানটি মেক্সিকোর আকাশপথ ব্যবহার করতে পারে না। ফলে বেশ কিছু গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ঘুরপথে চলাচল করতে হচ্ছিল বিমানটিকে। এমন পরিস্থিতিতে অবৈধবাসীদের বিতাড়নের জন্য পেন্টাগনের সামরিক বিমান ব্যবহার আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোয়াইট হাউস।