দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতার বহুদেশীয় গোষ্ঠী ‘সার্ক’ বর্তমানে প্রায় অকেজো অবস্থায় রয়েছে। এই গোষ্ঠীর পরিবর্ত হিসাবে নতুন জোটটি তৈরি করতে চাইছে ইসলামাবাদ এবং বেজিং।
সম্প্রতি চিনের কুনমিঙে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে চিন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে। বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্রে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, কুনমিঙের বৈঠকও আসলে এই নতুন জোট তৈরির প্রক্রিয়ার অংশ। দক্ষিণ এশিয়ার যে দেশগুলি সার্কের সদস্য, তাদের এই নতুন জোটে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়েও চিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে দাবি ওই সূত্রের। যদিও এমন কোনও জোটের বিষয়ে আলোচনার কথা অস্বীকার করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের দাবি, বেজিংয়ে কোনও ‘রাজনৈতিক’ বৈঠক হয়নি। ঢাকা, বেজিং এবং ইসলামাবাদের মধ্যে নতুন জোট নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলেই দাবি বাংলাদেশ সরকারের। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের বক্তব্য, “আমরা কোনও জোট তৈরি করছি না।”
দক্ষিণ এশিয়ার বহুদেশীয় গোষ্ঠী ‘সার্ক’ এখন প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে ‘সার্ক’-এর কোনও সম্মেলন হয়নি। এই বহুদেশীয় গোষ্ঠীতে মোট আটটি দেশ রয়েছে— ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা এবং মলদ্বীপ। ২০১৪ সালে এই গোষ্ঠীর শেষ সম্মেলন হয়েছিল। উরি জঙ্গি হানার প্রতিবাদে ২০১৬ সালে পাকিস্তানে আয়োজিত ‘সার্ক’ সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। এর পরে বাংলাদেশ, ভুটান এবং আফগানিস্তানও সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে ওই সম্মেলন ভেস্তে যায়। তার পর থেকে আর কোনও ‘সার্ক’ সম্মেলন হয়নি। বর্তমানে ‘সার্ক’ গোষ্ঠী দৃশ্যত নিষ্ক্রিয় অবস্থাতেই রয়েছে।
পিটিআই জানিয়েছে, নতুন ওই সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতকেও আমন্ত্রণ জানানোর কথা ভাবা হচ্ছে বলে সূত্রের দাবি। নতুন গোষ্ঠীতে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান এবং মলদ্বীপকেও। দাবি করা হচ্ছে, আঞ্চলিক যোগাযোগ এবং বাণিজ্যে আরও গতি আনতেই এই নতুন গোষ্ঠীটি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও কূটনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, পাকিস্তানের তত্ত্বাবধানে যদি এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী তৈরি হয় এবং সেখানে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়, সে ক্ষেত্রে ভারতের যোগ না-দেওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল।