The news is by your side.

ফুটবলের বিশ্বযুদ্ধ শুরু হচ্ছে আজ

0 125

দুনিয়ার সবচেয়ে বড় খেলার আকর্ষণ বিশ্বকাপ ফুটবল। আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পৃথিবীর মানুষ একটা মঞ্চে দাঁড়াবে।

করোনায় পেছায়নি একমাত্র খেলা সেটা বিশ্বকাপ ফুটবল। বাইশতম আসর বাইশেই হচ্ছে। বিশ্বকাপ ফুটবল জুনে শুরু হয়ে জুলাইয়ে শেষ হয়। এবার ব্যতিক্রম। শীত মৌসুমে নভেম্বরে শুরু হয়ে ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে।

এশিয়ার অন্যতম ধনী দেশ কাতারে হচ্ছে বিশ্বকাপ। উত্তপ্ত গরম, তাই বিশ্বকাপ শীতে আনা হয়েছে। ফিফার টেবিল থেকে সিদ্ধান্ত আনতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। আয়োজকের নাম ঘোষণা হওয়ার পরও বহুভাবে চেষ্টা হয়েছিল যেন কাতার থেকে বিশ্বকাপের মঞ্চটা তুলে নিয়ে অন্য কোনো দেশে বসিয়ে দেওয়া হয়। গরমে খেলতে পারবে না বলে কাতারের কাছ থেকে কেড়ে নিতে কমচেষ্টা হয়নি। কাতার বলে দিল স্টেডিয়ামে ঠান্ডা বাতাস ছড়িয়ে দেওয়া হবে।

চাট্টেখানি কথা নয়। ২০০২ সাল, আজ থেকে ২০ বছর আগে যেখানে শতভাগ সুযোগসুবিধা থাকার পরও অর্থনৈতিক উন্নত দেশ জাপান-কোরিয়াকে যৌথভাবে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করতে দিল ফিফা। আর সেখানে ২০ বিছর পর অপ্রতুলতার মধ্যে কাতারকে একাই আয়োজক বানিয়ে দিয়েছিল ফিফা। এটি একটি ইতিহাস যে, এশিয়ার প্রথম কোনো দেশ এককভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করছে। এটাই এশিয়ার শেষ আয়োজন কি না, নিশ্চিত না। তবে ৩২ দেশ নিয়ে ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের এটাই যে শেষ বিশ্বকাপ। আগামী আসরে ৪৮ দেশ খেলবে।

আয়োজক দেশ হিসেবে কাতার লড়াই করবে। বাছাইয়ে খেলেছিল কাতার। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে ঢাকায় এসেছিল। যোগ্যতার ভিত্তিতে না হলেও কাতার সরাসরি লড়াই করবে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফুটবল ময়দানে এই যুদ্ধের লড়াইয়ে কাতার কোনো আলোচনায় নেই। সব আলো পড়ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, পর্তুগাল, স্পেন, ইংল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, বেলজিয়ামের দিকে। সার্বিয়া, তিউনিশিয়া, মরক্কো, ক্যামেরুন, পোল্যান্ড, ইকুয়েডর, ওয়েলস, কতটা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে সেটা সময় বলে দেবে।

প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট হারালে সর্বনাশ হয়ে যাবে। ফুটবল পণ্ডিতরা বলছেন, এক নম্বর দুই নম্বর দল যদি হয় ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা, তাহলে এর বাইরে ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানি সেমিফাইনালে যেতে পারে। এই হিসাব দলের শক্তির বিচারে।

ল্যাটিন আমেরিকান দেশগুলো ইউরোপে গিয়ে ভালো করে না। আবার ইউরোপিয়ান দেশগুলো ল্যাটিনে গিয়েও ভালো করে না। এই দেশগুলো কাতারে আসবে। এশিয়ার চারটি দেশ অস্ট্রেলিয়া, ইরান, জাপান, সৌদি আরব এসেছে বাছাই পর্ব হতে। আর কাতার এসেছে স্বাগিতক দেশ হিসেবে। এশিয়ান দেশগুলোর জন্য কাতারের আবহাওয়া হবে অনেকটাই পরিচিত। যেটা ইউরোপিয়ান কিংবা ল্যাটিনের দেশগুলোর জন্য কঠিন। যখন ইউরোপ এবং ল্যাটিনের দেশের বিপক্ষে এশিয়ার দেশের খেলা হবে তখন আবহাওয়ার কারণে এশিয়ানরা একটু এগিয়ে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। সেই এগিয়ে থাকার সুযোগটা এশিয়ান দেশগুলো কীভাবে লুফে নিতে পারে সেটাও দেখার বিষয়। ল্যাটিন এবং ইউরোপিয়ান দেশ মানিয়ে নিতে গিয়ে যদি ভুল করে বসে তাহলে সেটা পূরণ করা কঠিন হয়ে যাবে। প্রথম দুটো ম্যাচ বড় ফ্যাক্টর হয়ে যাবে।

এবারের বিশ্বকাপে নতুন চ্যাম্পিয়নও হতে পারে। বিশ্বকাপের সবগুলো আসর দেখলে বলা যায়, চ্যাম্পিয়নরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্রায়। শেষ বার নতুন চ্যাম্পিয়ন এসেছিল স্পেন ২০১০ সালে। কেউ বলতে পারে না ক্রোয়েশিয়া, বেলজিয়াম বেশি ভালো খেলে দিতে পারে। ব্রাজিল আর্জেন্টিনা দলে ছয়-সাত জন ভালো ফুটবলার রয়েছেন। যে কেউ একটা ম্যাচ বের করে দিতে পারেন। এখানেও একটা টেনশন আছে। সেটা হচ্ছে বিশ্বকাপের আগে ইউরোপের লিগ চলছিল। একের পর এক ইনজুরি হয়েছে। বিশ্রাম পায়নি। অন্যান্য সময় টিম কম্বিনেশনের সুযোগ ছিল। এবার সেটা হয়নি। খেলোয়াড়রা চোট পেয়ে চূড়ান্ত একাদশে ঢুকতে পারেননি। আবার কেউ চোট নিয়েই একাদশে ঢুকেছেন। কারণ, তাদের হাতে বিকল্প নেই। আবার এমন যদি হয় কারো মূল প্লেয়ারই ইনজুরিতে পড়ে গেলেন, কিংবা লালকার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়লেন। তাহলে তো সেই দলগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ হবে।

চ্যাম্পিয়ন হতে হলে কমবেশি ম্যাচ জিততে হবে। ইউরোপের লিগে খেলে আসা ক্লান্ত ফুটবলাররা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ পর্যন্ত দৌড়াতে গিয়ে কতটা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকবেন সেটাও একটা ভাবনার বিষয়। তার ওপর এশিয়ার আবহাওয়া বাধা তো আছেই। আর কোনো কথা নয়। টিভির পর্দায় বসে পড়ুন। হাতে রাখুন খাতাকলম। হিসাব করুন প্রিয় দল কোথায় যায়। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান হতেই আজ শুরু ফুটবলের বিশ্বযুদ্ধ।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.