ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভিপি বা সহ–সভাপতি পদে পরাজয়ের জের ধরে বিক্ষোভের পর ফলাফল মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ।
বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন উপাচার্যের বাসার সামনে এক প্রেস কনফারেন্সে এই ঘোষণা দেন।
এসময় বিক্ষোভরত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উপাচার্যের বাসার সামনে থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান করেছেন।
পরে টিএসসিতে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সদ্য নির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নূরকে নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
সেখানে ভিপি পদে জয়ী হওয়ায় নূরকে অভিনন্দন জানান শোভন।
এসময় নূরও ছাত্রলীগের কাছ থেকে সহযোগিতা আশা করেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকে উপাচার্যের বাসভবনের বাইরে সমাবেশ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছিল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
ওই পদের নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ উল্লেখ করে তারা মিছিল করছে।
এর আগে সোমবার মধ্যরাতে ফলাফল ঘোষণার সময় ভিপি পদে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হককে সহ-সভাপতি পদে বিজয়ী ঘোষণার পরে বিক্ষোভ শুরু করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। সে সময় তারা উপাচার্যকে আধাঘণ্টার জন্য অবরুদ্ধ করে রাখে।
কোটা আন্দোলনের নেতা হিসেবে পরিচিত সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্রার্থী নুরুল হক নুরু প্রায় দুই হাজার ভোটের ব্যবধানে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে হারিয়েছেন।
এদিকে ক্যাম্পাসে আরেকটি সমাবেশে বামজোট সমর্থিত বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা নির্বাচন বাতিল ও পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়েছে। নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী বলেছেন, ”আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছি।আমরা নির্বাচন বাতিল করে পুনঃতফসিল চাই।”
গতকাল বিকেলে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগেই ভোটে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছিল ছাত্রলীগ ছাড়া বাকি সব প্যানেল। এসময় তারা পুনঃ তফসিলের দাবি জানায়।
একে “প্রহসনের নির্বাচন” উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস জুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ভোট বর্জন করা প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা।
ক্যাম্পাসে বিপুল সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন করতে দেখা গেছে।
ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানি এবং সহ সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে নির্বাচিত হয়েছেন সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
নির্বাচিত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন সাদ বিন কাদের চৌধুরী (স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক), মো:আরিফ ইবনে আলী (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি), লিপি আক্তার (কমনরুম ও ক্যাফেটারিয়া), শাহরিমা তানজিন অর্নী ( আন্তর্জাতিক সম্পাদক), মাজহারুল কবির শয়ন (সাহিত্য সম্পাদক), আসিফ তালুকদার (সংস্কৃতি সম্পাদক), শাকিল আহমেদ তানভীর (ক্রীড়া সম্পাদক), শামস-ঈ-নোমান (ছাত্র পরিবহন) ও আখতার হোসেন (সমাজসেবা সম্পাদক)।
সদস্য পদে বিজয়ীরা হলেন – যোশীয় সাংমা চিবল, রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য, তানভীর হাসান সৈকত, তিলোত্তমা সিকদার, নিপু ইসলাম তন্বি, রাইসা নাসের, সাবরিনা ইতি, রাকিবুল হাসান রাকিব, নজরুল ইসলাম, মোছা ফরিদা পারভীন, মুহা. মাহমুদুল হাসান, সাইফুল ইসলাম রাসেল ও রফিকুল ইসলাম সবুজ।