ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের মোরবি ব্রিটিশ আমলে তৈরি প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো একটি ঝুলন্ত সেতু ভেঙে নদীতে পড়ার ঘটনায় মৃতের বেড়ে ১৪১ জনে পৌঁছেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং আরও কয়েকজনের অনুসন্ধান চলছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।ঘটনার সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে নয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার সন্ধ্যায় মোরবি জেলায় মাচ্চু নদীর উপর ওই ঝুলন্ত সেতুটি কয়েকশ মানুষ নিয়ে হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ে, এতে তৎক্ষনাৎ অন্তত ১৩৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সোমবার নিহতের সংখ্যা ১৪১ বলে জানিয়েছিল, পরে তা সংশোধন করা হয়।
সে সময় সেতুতে থাকা অনেকেই অন্ধকারের মধ্যে ছিটকে নদীতে পড়ে যান। সোশাল মিডিয়ায় আসা ভিডিওতে ভেঙে পড়া সেতু থেকে বহু মানুষকে ঝুলে থাকতেও দেখা গেছে।
এ সময় সাহায্য পাওয়ার জন্য অনেকে চিৎকার করছিলেন। নিহতদের মধ্যে বহু শিশু, নারী ও বৃদ্ধ লোক আছে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে কাউকে খুঁজে পাওয়ার আশা ক্রমেই মিলিয়ে যাচ্ছে।
আহমেদাবাদ থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯ শতকে, ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সময়। স্থানীয়দের কাছে জুল্টো পুল নামে পরিচিত ২৩০ মিটার দীর্ঘ ওই সেতুতে অনেকেই বেড়াতে যান।
সাত মাস বন্ধ রেখে সংস্কার কাজ সেরে মাত্র পাঁচ দিন আগে গুজরাটের নববর্ষের দিন সেতুটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। কেন সেটি ভেঙে পড়ল তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে গুজরাট প্রশাসন।
পুলিশ জানিয়েছে, যে নয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা সবাই ওরেভা গ্রুপের সঙেগ্ সংশ্লিষ্ট, এই কোম্পানি সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণের
দায়িত্বে রয়েছে। এই গোষ্ঠীর অন্তর্গত সংস্থা অজন্তা ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে সেতু সংস্কারের কাজ নিয়ে মোররি পৌরসভার চুক্তি হয় বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
শস্য রপ্তানি চুক্তিতে রাশিয়াকে ফিরে আসার আহ্বান পশ্চিমাদের ইউক্রেনের সঙ্গে খাদ্যশস্য রপ্তানির চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।
এর আগে শনিবার কৃষ্ণসাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার ঘটনায় ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানির চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয় রাশিয়া।
বিশ্বের খাদ্য সংকট নিরসনে গত ২২ জুলাই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় প্রাথমিকভাবে তিন মাসের জন্য ওই চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল।
এর আওতায় নিজ দেশের কৃষ্ণসাগর উপকূলের বন্দর দিয়ে বিশ্বের অন্য অঞ্চলে খাদ্যশস্য রপ্তানির সুযোগ পায় ইউক্রেনে। এখন এ চুক্তি থেকে রাশিয়ার বেরিয়ে যাওয়াকে বিশ্বে খাদ্যশস্য সরবরাহ নিশ্চিতের পথে বড় ধরনের একটি আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই চুক্তির আওতায় এরইমধ্যে ৯০ লাখ টন শস্য রপ্তানি করা হয়েছে। চুক্তিটি ১৯ নভেম্বর নবায়ন করার কথা ছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হলে কৃষ্ণসাগর অবরোধ করেছিল রাশিয়া। তাতেই বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের দামে উল্লম্ফন দেখা দেয়।
শস্যের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল অনেক দরিদ্র দেশে দেখা দেয় খাদ্য সংকট। এরপরই আন্তর্জাতিক উদ্যোগে হয়েছিল ওই শস্য সরবরাহ চুক্তি। শনিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোল বন্দরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার পর চুক্তিটি স্থগিত করে মস্কো।
এদিকে ইউক্রেনের সঙ্গে খাদ্যশস্য রপ্তানির চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউর পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল রোববার রাশিয়ার প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছেন।
টুইটারে দেওয়া পোস্টে জোসেপ বোরেল বলেন, রাশিয়াকে তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। রাশিয়া শস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে সরে আসার ঘটনাটিকে সম্পূর্ণভাবে আপত্তিকর বলে আখ্যায়িত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোবাইডেন।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন অভিযোগ করেছেন, খাদ্যকে অস্ত্র বানাতে চায় রাশিয়া।