The news is by your side.

জি-বাংলাসহ কয়েকটি ভারতীয় চ্যানেল দেখা যাচ্ছে না বাংলাদেশে

0 615

 

পয়লা এপ্রিল  থেকে জি-বাংলাসহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ভারতীয় চ্যানেল দেখা যাচ্ছে না। তবে সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সরকার কোন চ্যানেল বন্ধ বা ব্লক করেনি।

তবে, বিদেশী চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন বন্ধের জন্য আগে কেবল অপারেটরদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে, কেবল অপারেটরদের সংগঠন বলছে, তথ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাবার পর ভারত থেকেই ঐ চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে।

যদিও এ সংক্রান্ত কোন লিখিত নির্দেশনা তারা পাননি।

জি-বাংলাসহ এই চ্যানেলগুলোতে গেলেই একটি নোটিশ দেখা যাচ্ছে, যাতে বলা হয়েছে, “পরবর্তী নোটিশ না পাওয়া পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে এই চ্যানেলটি সাময়িকভাবে ব্লক করা হয়েছে।”

তবে এই নোটিশের সঙ্গে কোন ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।

তবে বিস্তারিত তথ্যের জন্য যে ডাউনলিংকের মাধ্যমে ঐ চ্যানেল সম্প্রচার করা হতো, তাদের একটি হটলাইন নম্বর দেয়া রয়েছে নোটিশের নিচের অংশে।

 

কী কী চ্যানেল দেখা যাচ্ছে না?

বাংলাদেশের কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ জানিয়েছেন, এই মূহুর্তে ভারতের জি নেটওয়ার্কের কোন চ্যানেলই দেখা যাচ্ছে না।

এর মানে হলো, জি-বাংলা, জি-টিভি, জি-মিউজিক, জি-সিনেমা, জি-নিউজসহ অন্তত ১৪টি চ্যানেল দেখা যাচ্ছেনা।

এর মধ্যে জি-বাংলা বাংলাদেশে বিশেষ করে নারীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। তবে, আরেক জনপ্রিয় ভারতীয় চ্যানেল স্টার-জলসা এখনো দেখা যাচ্ছে।

কী বলছে সরকার?

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, সরকার কোন চ্যানেল ব্লক করেনি। তবে, বিদেশী চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন বন্ধের জন্য যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এ ঘটনার পেছনে তার ভূমিকা থাকতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

“বাংলাদেশে বিদেশী যেকোন চ্যানেল তাদের কন্টেন্ট দেখাতে পারবে, বিজ্ঞাপন দেখাতে পারবে না, এটা বাংলাদেশের আইন যা ২০০৬ সাল থেকে বলবৎ আছে। এই আইন এতদিন কার্যকর ছিল না, আমরা এখন সেই আইন কার্যকর করার কথা বলেছি পয়লা এপ্রিল থেকে।”

“এবং সেজন্য যারা ডাউনলিংক করে, মানে বিদেশী চ্যানেল দেখায়, তারা যাতে সময় পায়, আমরা তাদের দুই মাস আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। এরপর আরো একবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। সর্বশেষ ৩১শে মার্চ আবারো বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।”

“এরপর পয়লা এপ্রিল যে প্রধান দুই কোম্পানি বাংলাদেশে ডাউনলিংক করে, তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আইনটি কার্যকর করছি আমরা, অন্য কিছু নয়।”

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান   মাহমুদ জানিয়েছেন, যে আইনের বলে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, সেই আইনে বলা আছে, বিদেশী চ্যানেলে কেবল দেশের পণ্যে কোন বিজ্ঞাপন নয়, কোন বিজ্ঞাপনই প্রদর্শন করতে পারে না।

“যদি করে, এটি দুই বছরের কারাদণ্ড, এবং এক লাখ টাকা জরিমানা হবে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে তিন বছরের কারাদণ্ড ও অন্যান্য শাস্তি হবে।”

হাছান   মাহমুদ  বলছেন, সেই নির্দেশনা অনুযায়ী অপারেটররা হয়ত ভারতীয় চ্যানেল ব্লক করে থাকতে পারে।

কেবল অপারেটররা কী বলছে?

বাংলাদেশের কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ জানিয়েছেন, সরকারের কাছ থেকে চ্যানেল ব্লক করা সংক্রান্ত লিখিত কোন নির্দেশনা তারা পাননি।

“কেবল অপারেটর হিসেবে আমাদের কোন দিক-নির্দেশ দেয়া হয়নি। তবে যতটুকু জানি এটা দেওয়া হয়েছে স্থানীয় পরিবেশক যারা আছে বিদেশী পে-চ্যানেলের তাদেরকে।”

“দ্বিতীয়ত, বিদেশী চ্যানেলে বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন না দেখানোর নোটিশ সরকার আগে যখন দিয়েছে, তারপর তারা (ভারতীয় চ্যানেল কর্তৃপক্ষ) ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু সরকার এখন বলছেন, কোন বিজ্ঞাপনই দেখানো যাবে না।”

“এখন বাংলাদেশের মার্কেটের থেকে যে রেভেনিউ তারা পায়, তাতে বিজ্ঞাপন বিহীন হলে আমার মনে হয় না, তাদের এটা চালানো সম্ভব হবে।”

যে কারণে আনোয়ার পারভেজ  দাবি করেছেন, চ্যানেল ব্লক করার সিদ্ধান্ত ভারতের দিক থেকে কর্তৃপক্ষ নিয়েছে।

ভারতীয় চ্যানেল সম্প্রচারে বিরোধিতা

ভারতের বেশ কয়েকটি বাংলা চ্যানেল বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। এর মধ্যে জি-বাংলা, স্টার জলসা এবং স্টার প্লাস রয়েছে।

তবে, একদিকে জনপ্রিয়া যেমন রয়েছে এসব চ্যানেলের, তেমনি ভারতীয় কয়েকটি চ্যানেল বিশেষ করে বাংলা চ্যানেল সম্প্রচার নিয়ে বাংলাদেশে যথেষ্ট বিরোধিতাও রয়েছে।

জি-বাংলা, স্টার জলসা এবং স্টার প্লাস এই তিনটি ভারতীয় চ্যানেল কেন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে ২০১৪ সালে একটি রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট।

যদিও পরে এ সংক্রান্ত রিটটি খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। বাংলাদেশে বিনোদন জগতের অনেকেই ভারতীয় কয়েকটি চ্যানেল বন্ধ করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।

যদিও নানা সময় জরিপে এ কথাও সামনে এসেছে যে ভারতীয় টেলিভিশনের চ্যানেলগুলোর বিশাল সংখ্যায় দর্শক রয়েছে বাংলাদেশে।

কয়েক বছর আগে করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের এক জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে নারীদের ৯০ শতাংশ টেলিভিশন দেখেন, কিন্তু এদের ৬০ শতাংশই দেখেন স্টার জলসাসহ ভারতীয় বাংলা চ্যানেলগুলো।

Leave A Reply

Your email address will not be published.