The news is by your side.

অপরিকল্পিত ও অবৈজ্ঞানিক লকডাউন কোন কাজে আসবে না: টেকনিক্যাল কমিটি

0 537

 

 

রবিবার থেকে রাজধানীর রাজাবাজার ও ওয়ারী এলাকা লকডাউন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। মসজিদ থেকে মাইকিংও করা হয়েছিল। কিন্তু রাজাবাজারের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুল ইসলাম  বলেন, শুধু মুখে বললেই হবে না, অনেক প্রস্তুতির বিষয় আছে। আমাদের কেউ নির্দেশনা দেয়নি, আমরা এটা বাস্তবায়নও করিনি। তবে ওয়ারী এলাকায় অনেকেই নিজ দায়িত্বে লকডাউন পালন করেছেন। অনেক হাউজিংয়ের গেট বন্ধ করে লকডাউনের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, তারা কোনো লকডাউন করেননি, এমন কোনো নির্দেশনাও আসেনি।

জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির একজন সদস্য বলেন, জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী লকডাউন পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। সেখানে অবৈজ্ঞানিকভাবে কে বা কারা লকডাউনের ঘোষণা দিচ্ছেন, এলাকার মানুষও কেউ মানছে, কেউ মানছে না—এভাবে তো হবে না। সমন্বয় না থাকার কারণে আগের ছুটির সময় সফলতা আসেনি। এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এটা বিশেষজ্ঞ কমিটির কাজ। তারা প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। সেটি প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করার পরই বাস্তবায়ন হবে।

জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ জানান, লকডাউন করার আগে তিনটি প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। এক, লকডাউন করতে হলে কীভাবে তা বাস্তবায়ন করা হবে তার পূর্বপরিকল্পনা থাকতে হবে। দুই, যে এলাকায় লকডাউন করা হবে ঐ এলাকার জনগণকে ৪৮ ঘণ্টা আগে জানাতে হবে। যাতে তারা জরুরি কেনাকাটা সারতে পারে। তিন, কমিউনিটিকে সংযুক্ত করতে হবে। এভাবে লকডাউন কার্যকর করে লন্ডনসহ ইউরোপের অনেক দেশ সফলতা পেয়েছে। তাই লকডাউন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে উল্লিখিত তিনটি বিষয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি বলেন, ১৯ সদস্যের জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির পরামর্শ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে হলে চিকিত্সার বিষয়টি জড়িত। জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি ইতিপূর্বে চার দফা বৈঠক করে যে প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে তা আদৌ গ্রহণ করা হয়েছে কি না, জানে না পরামর্শক কমিটি।

পঞ্চম দফার বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের এক জন প্রতিনিধিকে রাখা হয়। তখন তিনি বিষয়গুলো বুঝতে পারে—যার সুফল এরই মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে পরামর্শক কমিটির কাউকে রাখা হয় না। যদি রাখা হয় তাহলে সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন হতে পারে। কারণ আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে প্রস্তাব পাঠাবে পরামর্শক কমিটির কাছে। পরামর্শক কমিটি সেগুলো যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেবে। তাই আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির বৈঠকে জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্যদের রাখা হলে সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়। মোটকথা করোনা ভাইরাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে রয়েছে সমন্বয়ের বড়ো ঘাটতি। এ কারণে চিকিত্সা ব্যবস্থাপনায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা করোনা রোগীর পাশে যান না। তারা মাস্ক ও পিপিইর মান নিম্নমানের কারণে ভয়ে আছেন। অনেক ডাক্তারও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত এক শ্রেণির কর্মকর্তা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়। চীন সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেছে দ্রুত। হাইপো অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু আছে। কিন্তু আমাদের দেশে হাইপো অক্সিজেন নেই। পরামর্শক কমিটি এ ব্যাপারে কয়েক দফা প্রস্তাবও দিয়েছে। কিন্তু বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়নি।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. খান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাজধানী, চট্টগ্রাম, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরসহ যেসব এলাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি সেসব এলাকায় চলতি জুন মাসটি সত্যিকারের লকডাউন দিতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিন সপ্তাহের জন্য দরিদ্র মানুষের খাবারের ব্যবস্থাসহ অন্যান্য প্রস্তুতি নিতে হবে। তাহলে হয়তো সামনে বড়ো বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.