The news is by your side.

শাবনূরকে তার কৃতকর্মের জন্য ‘সরি’ বলতে হবে: সামিরা

0 705

 

নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা প্রয়াত সালমান শাহের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক বলেছেন,শাবনূরকে তাঁর কৃতকর্মের জন্য সরি বলতে হবে। সেটা এখন হোক কিংবা পরে, এই জীবনে কিংবা শেষ বিচারের দিনে।

চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র মৃত্যুরহস্য নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া প্রতিবেদন খুব একটা আনন্দেরও না, আবার বেদনারও উল্লেখ করে কথাগুলো বলেন সামিরা।

পিবিআই’র প্রতিবেদনে নতুন করে সালমান শাহর সঙ্গে শাবনূরের ঘনিষ্ঠতার কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামিরা বলেন, সালমান শাহ ও শাবনূর যে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন, সে কথা সালমান নিজেই আমার কাছে স্বীকার করেন।

বাংলা সিনেমার হার্টথ্রব হিরো সালমান শাহর সঙ্গে সামিরা হকের বিয়ে হয় ১৯৯২ সালের ২০ ডিসেম্বর।

প্রেমের সম্পর্কের শুরু তারও দুই বছর আগে। সামিরা বলেন, সালমান তাঁকে সঙ্গে নিয়েই শুটিংয়ে যেতেন। প্রায় প্রতিটি সিনেমায় সালমানের ‘ড্রেস ডিজাইনার’ ছিলেন তিনি। ’৯৬ সালে বাদল খন্দকারের একটি সিনেমার শুটিংয়ে সালমান ও শাবনূর কক্সবাজারে যান। সেখানেই সম্পর্কে জড়ান তাঁরা। ওই বছরের আগস্টে শাবনূরকে নিয়ে সিঙ্গাপুরে যান সালমান। সেখান থেকে ফিরে সালমান নিজেই সামিরাকে বলেন, তিনি একটা অন্যায় করে ফেলেছেন। শাবনূরের সঙ্গে এমন কিছু পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হতে পারে। সামিরা তখনই বিবাহবিচ্ছেদ চেয়েছিলেন। সালমান শোনেননি। তখন কিছু পত্রপত্রিকায় সালমান শাবনূরকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন বলে খবর বেরোয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায়, সংবাদ সম্মেলন করে সালমানকে ঘোষণা দিতে হয় সামিরা তাঁর স্ত্রী।

একপর্যায়ে সামিরা চট্টগ্রামে চলে যান। চট্টগ্রামে থেকেও তিনি খবর পাচ্ছিলেন সালমানকে অসদাচরণের জন্য প্রযোজক-পরিচালক সমিতি থেকে তিরস্কার করা হয়েছে। তিনি কাজে মন বসাতে পারছেন না। বেশ কিছু অঘটনও ঘটিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ৩ সেপ্টেম্বর সালমানের কাছে ফিরে আসেন সামিরা। এসে কী দেখলেন? এমন প্রশ্নে সামিরা বলেন, ‘ইমন (সালমান) কতটা আবেগপ্রবণ ছিল, সেটা কেউ বুঝবে না। ভাববে সিনেমাটিক। কিন্তু আমি ফিরে দেখলাম, রাগ করে চট্টগ্রাম যাওয়ার আগে যেভাবে যা রেখে গেছি, সেভাবেই আছে। ইমন মাটিতে ঘুমোচ্ছে। সঙ্গে আমার একটা টপস।’ সামিরা সব ভুলে নতুন করে শুরু করতে চেয়েছিলেন। পরদিন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানেও দুজনে একসঙ্গে যান। ওই বছর সালমান সেরা চিত্রনায়ক ও শাবনূর সেরা নায়িকার পুরস্কার পেয়েছিলেন। তবে শাবনূর ওই অনুষ্ঠানে আসেননি। এর দুদিন পর মারা যান  সালমান।

সামিরা বলেন, ‘কাজ করতে করতে একে অপরের কাছাকাছি এসেছিলেন সালমান-শাবনূর। এটা আমি মেনে নিতে পারিনি। সালমানের সঙ্গে শাবনূর সিঙ্গাপুরেও যান। এই কথাগুলো আমি পিবিআইকে বলেছি। শাবনূরের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সালমানও ব্ল্যাকমেইল হওয়ার শঙ্কায় থাকতো।’

শাবনূরের বিষয়টি টেনে এনে সামিরা বলেন,  তাদের সম্পর্কের কারণে সালমান আমাকে সরি বলেছিল, আমি সব ভুলে তার সঙ্গে ঢাকায় এসেছিলাম। শাবনূরকেও ক্ষমা করে দিয়েছি। কোথাও একটি কথাও আমি বলিনি সালমান-শাবনূরের সম্পর্ক নিয়ে। শাবনূরকে নিয়ে একটা অভিযোগও তুলিনি আমি। আমি চাইনি এসব নিয়ে আলোচনা হোক।

সামিরা আরও বলেন, এই যে এখন সবাই শাবনূরকে টেনে এনে সালমানের চরিত্র নিয়ে নানারকম সমালোচনা করছে। এটা আমি চাইনি কোনোদিন। কিন্ত মা হয়ে, ভাই হয়ে তারা চেয়েছে। আত্মহত্যা জেনেও এটা নিয়ে নাটক বানিয়েছে, একবার দাফন করা লাশ আবার উঠিয়েছে। একবারের রিপোর্ট বারবার করিয়ে ঘাঁটতে ঘাঁটতে সালমানকে সমালোচনার পাত্র বানিয়েছে। এটা তাদের পক্ষেই সম্ভব হয়েছে। আমি কোনোদিন চাইনি। যা হয়েছে মেনে নিয়েছিলাম।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজের বাসা থেকে সালমান শাহ’র মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সামিরা এখন তিন সন্তানের মা। ১৯৯৯ সালে দুই পরিবারের সম্মতিতে তিনি বিয়ে করেন সালমান শাহর বন্ধু মোস্তাক ওয়ায়েজকে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.