The news is by your side.

যুদ্ধাপরাধী আজহারের আপিলের রায় বৃহস্পতিবার ‍

0 762

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিলের রায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার। জানা যায়, মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় রায়ের জন্য ১ নম্বরে রাখা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে গত ১০ জুলাই এ আপিল মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রেখেছিল। এই আপিল বেঞ্চের অন্য তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা এবং বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান।

যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর রংপুর জেলা আলবদর বাহিনীর কমান্ডার এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। প্রসিকিউশনের আনা নয় ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পাঁচটি এবং পরিকল্পনা-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি (উর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের রায় আসে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা চালিয়ে অন্তত ১৪০০ লোককে হত্যা এবং ১৪ জনকে খুনের অপরাধে।

এছাড়া ওই অঞ্চলের বহু নারীকে রংপুর টাউন হলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্রে ধর্ষণের জন্য তুলে দেওয়ার অভিযোগে একাত্তরের এই বদর কমান্ডারকে ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অপহরণ ও আটকে রেখে নির্যাতনের আরেকটি ঘটনায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আইন অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি খালাস চেয়ে আপিল করেন জামায়াতে ইসলামীর এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল।

এরপর ২০১৭ সালের ১৩ অগাস্ট এক আদেশে আপিল বিভাগ আসামিপক্ষকে আপিলের সার সংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেয়।
ওই বছর ১০ অক্টেবর আপিলের ওপর শুনানি শুরুর কথা থাকলেও আসামিপক্ষের সময়ের আবেদনে তা পিছিয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকার পর গত ১৮ জুন সর্বোচ্চ আদালতে এ মামলার শুনানি শুরু হয়। যুক্তি উপস্থাপন শেষে ১০ জুলাই আপিল মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে।

জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের পক্ষে আপিল বিভাগে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন ও শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

 

যুদ্ধাপরাধী আজহার

১৯৬৮ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করে পরের বছর আজহারুল ইসলাম ভর্তি হন রংপুর কারামাইকেল কলেজে। একত্তরে বাঙালি যখন মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, আজহার তখন জামায়াতের সেই সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের জেলা কমিটির সভাপতি হিসাবে আলবদর বাহিনীর রংপুর শাখার কমান্ডার।

বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম দমনে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা দিতে শীর্ষ জামায়াত নেতাদের তত্ত্বাবধানে এই সশস্ত্র দলটি গড়ে তোলা হয়।

পাকিস্তানি বাহিনী সে সময় রংপুর টাউন হলকে  নির্যাতন কেন্দ্রে পরিণত করে এবং বৃহত্তর রংপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বাধীনতার পক্ষের লোকজনকে ধরে এনে সেখানে নির্যাতন করা হয়।

স্বাধীন বাংলাদেশে জিয়াউর রহমানের আমলে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার পর দলের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন আজহার। ১৯৯১ সালে তিনি ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমিরের দায়িত্ব পান এবং ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হন।

২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল এটিএম আজহারের যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করেন তদন্ত কর্মকর্তা এস এম ইদ্রিস আলী। ওইবছর ২২ অগাস্ট মগবাজারের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

যুদ্ধাপরাধের ছয় ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর আজহারের বিচার শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.