The news is by your side.

এসএসসি পর্যন্ত বিষয় ভিত্তিক বিভাজন না করার পক্ষে প্রধানমন্ত্রী

0 660

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজ্ঞানশিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় নবম শ্রেণি থেকেই বিষয়ভিত্তিক বিভাজন (বিজ্ঞান-কলা-বাণিজ্য) তুলে দেওয়ার পক্ষে নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, এটা না থাকাই ভালো। এসএসসির পরে গিয়ে যদি বিভক্ত হয়, সেটাই ভালো।

বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) আয়োজিত পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের সর্বোচ্চ নম্বর/সিজিপিএ প্রাপ্তদের হাতে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৮’ প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবই পড়ুক, তারপর যেখানে সে মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে সেটা করে নেবে। তাহলে অন্তত, তাদের (শিক্ষার্থীদের) মেধা বিকাশের একটা সুযোগ হয়।

প্রধানমন্ত্রী চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রসঙ্গ টেনে এজন্য শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এখন সব সাবজেক্টই বিজ্ঞান ভিত্তিক। সেটা ধীরে ধীরে চলেই এসেছে। বিজ্ঞানের বাইরে কিছু নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জনসংখ্যাকে আমরা যদি কারিগরি, বিজ্ঞানভিত্তিক এবং প্রযুক্তিশিক্ষার মাধ্যমে সেইভাবে দক্ষ করে গড়তে পারি, তাহলে আমাদের কোনো সমস্যা তো কোনো দিন হবেই না বরং আমরা অন্য দেশকে সাহায্য করতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্লাস নাইন থেকে কে কোন সাবজেক্টে যাবে, তা ভাগ করে দেওয়া হয়। আমাদের এখানে একসময় করা হয়েছিল। এটা বোধহয় প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের সময়…. ৬৩ সালে করা হয়। কেউ বিজ্ঞান পড়ল না দুই বছর, এ জন্য সে এটায় ভর্তি হতে পারবে না, ওটায় ভর্তি হতে পারবে না…। আমেরিকায় এটা নাই… পৃথিবীর অনেক দেশে এটা নাই। কাজেই এটা না থাকাই ভালো। আমার মনে হয়, এই ভাগটা থাকার কোনো দরকার নাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে আমাদের মঞ্জুরী কমিশন যেন খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত একটা অভিন্ন নীতিমালা করা। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কতো ছাত্রছাত্রী থাকবে সেটাও সীমিত করে দেওয়া। কারণ ঢালাওভাবে ভর্তি করলে পড়াশোনা কীভাবে ঠিকমতো হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যাতে মানসম্মত শিক্ষা দিতে পারে সেটি নিশ্চিত করা। আর এখন এটা খুব কঠিন কাজ না।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে আরও শক্তিশালী করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের পরিধি আরও বৃদ্ধি করা, লোকবল বৃদ্ধি করা, দক্ষতা বৃদ্ধি করা, আমরা যে এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি সেটা যেন ভালোভাবে নজরদারি করতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে এটাকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি এবং নেবো।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের এ আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ১৭২ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে ২০১৮ ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’ দেন।

স্বর্ণপদক প্রাপ্তদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ব স্ব বিভাগে আজ যারা পুরস্কার হিসেবে স্বর্ণপদক পেলে তারা ২০৪১ সালের বাংলাদেশ গড়ার কারিগর। শিক্ষার মান উন্নয়নে আরও কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়- সে বিষয়ে তোমরা সুপারিশ করবে। শিক্ষার মানোন্নয়নে যা যা করা প্রয়োজন আমরা তাই করব। আমরা প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করে সারাদেশে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে চাই। আটটি বিভাগে আমরা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এ ছাড়া জেলা পর্যায়েও আমরা বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে চাই।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। স্বর্ণপদক প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্ত্রণালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ফিশারিজ টেকনোলজি’র শিক্ষার্থী মো. মোবারক হোসেন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজের শারমিন সুলতানা। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.