The news is by your side.

আমি সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয় করতে পছন্দ করি: সোহম

0 742

 

 

 

কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছেথাই কারি সেখানে আপনার চরিত্র অয়ন একজন শেফ, আপনি কি এমনিতে রান্না করতে পছন্দ করেন?
শুধু ম্যাগি বানাতে পারি, আগে পোচ বানাতাম, টোস্ট বানাতাম। ব্যস।

ইচ্ছেও নেই খুব একটা রান্না শেখার?
নাহ… রোম্যান্টিক ফিল্মের সোহম না কমেডি ফিল্মের সোহম, ব্যক্তিগতভাবে আপনার কাকে পছন্দ?
দেখুন কমেডি তো খুব ভাল, মানুষকে আনন্দ দেওয়া, হাসানো খুব ভাল ব্যাপার। আবার অন্যদিকে রোম্যান্টিক ছবিরও আলাদা চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত ইচ্ছে যদি জিজ্ঞেস করেন, তাহলে বলব আমি খুব হার্ডকোর সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয় করতে পছন্দ করি। যে চরিত্রে রোম্যান্সও আছে, একই সঙ্গে একটা সিরিয়াস শেডও রয়েছে। ‘প্রেম আমার’, ‘অমানুষ’… এই ধরনের ছবিগুলো। যেখানে আমি নিজেকে ভেঙেচুরে সম্পূর্ণটা দিয়ে অভিনয় করতে পারি।

এই যে হাতে পরপর এত কাজ, এত ব্যস্ততা, সামলাচ্ছেন কীভাবে?
ম্যানেজিংটা খুবই শক্ত। সত্যি কথা বলতে কী, পরিবার আর কাজের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে গিয়ে অনেক সময়ই পরিবারকে সময় দিতে পারি না। কম্প্রোমাইজ় করতে হয়। তবে সেটা কাজের জন্য তো করতেই হবে। কাজ বাদে বাকি যে সময়টা থাকে সেটা পুরোটাই পরিবারের জন্য। আমার স্ত্রী, দুই ছেলে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া, সিনেমা দেখা, তাদেরকে সময় দেওয়া এটাই আমার প্রায়োরিটি তখন। কাজের জন্য যেটুকু গ্যাপ হয় সেটা মেটানোর চেষ্টা করি।

তার মানে আপনি একজন ফ্যামিলি পার্সন
একদমই তাই! পরিবার আমার কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ!

আপনার স্ত্রী এই ভারসাম্য রাখতে কীভাবে সাহায্য করে?
সাহায্য করে বলতে সে তো মেনেই নিয়েছে (হাসি)। কী করবে, কাজের প্রেশার তো আর তার অজানা নয়…

অভিযোগ করেন না বিশেষ?
(হাসি) অভিযোগ তো অবশ্যই করে এক-এক সময়, কিন্তু ওই মেনে নিয়েছে। আসলে ও বোঝে আমার কাজটা। আমি নিজেও ওকে বলি যে কোথাও পার্সোন্যালি পার্টি করতে বা এনজয় করতে যাচ্ছি না। পুরোটাই কাজের জন্য যেতে হচ্ছে। আর আমাদের অভিনেতাদের একটা সমস্যা কী বলুন তো? মনের মধ্যে যাই চলুক ক্যামেরার সামনে একদম দেখানো যায় না। হয়তো মন খারাপ, কিন্তু সেই মুহূর্তে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে কমেডি সিনে অ্যাক্ট করতে হয়। এইগুলো ও জানে, ফিল করে। আসলে এতগুলো বছর হয়ে গিয়েছে তো, আন্ডারস্ট্যান্ডিং পাকাপোক্ত।

তার মানে স্ত্রীকে বেস্ট ফ্রেন্ড বলাই যায়?
একদম, ভীষণভাবে…

আচ্ছা আপনি প্রযোজনায় হাত দিয়েছিলেন, আবার রাজনীতিতেও আছেন, কোন অভিজ্ঞতাটা বেশি ইতিবাচক আপনার জীবনে?
রাজনীতির অভিজ্ঞতা। ছোটবেলা থেকেই অপ্রত্যক্ষভাবেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। ক্রমশ অনুভব করলাম যে সমস্ত মানুষ বা মতবাদের প্রতি আমার বিশ্বাস রয়েছে তাদের প্রতি আমার একটা দায়িত্ব আছে। তাই রাজনীতিটা আমি খুব মন দিয়ে করি, একটা প্যাশনের জায়গা থেকে করি।

রাজনীতি করতে গিয়ে কোনওভাবে কেরিয়ার ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি?
আমার কিন্তু সেটা মনে হয় না। হ্যাঁ, কেউ-কেউ হয়তো বলবে দু নৌকোয় পা দেওয়ার ব্যাপারটা। সেটা খানিকটা ঠিকই, একটু অসুবিধে হয়। কিন্তু আমি যখন ইলেকশনে দাঁড়িয়েছিলাম, তখন পুরোপুরি আমার মনকে তৈরি করে নিয়েছিলাম। আজকে ‘সোহম’ হিসেবে পরিচিতি আছে বলেই রাজনীতিতে সহজে এন্ট্রি হয়েছে আমার। এই প্রিভিলেজটা আমি বুঝি, রাজনীতিকে সবটা দিয়েও অনেকে এই জায়গাটায় পৌঁছতে পারে না। তাঁদের প্রতি আমার সম্মান আছে। কিন্তু এই যে ‘সোহম’-এর ইমেজটা, এটা তৈরি করেছে আমার অভিনয়ই। তাই কখনওই অভিনয়কে অবহেলা করিনি। ঠিক করে নিয়েছিলাম বছরে দুটো ছবি করব, আর বাকি সময়টা ‘বিট্টু’ হিসেবে মানুষের পাশে থাকব।

আপনি নাকি আর্মিতে জয়েন করতে চেয়েছিলেন
(হাসি) হ্যাঁ অনেক ছোটবেলায়…

হয়ে গেলেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির নায়ক, স্বপ্ন আর বাস্তবের পরিবর্তন মানিয়ে নিলে কীভাবে?
যখন আর্মি জয়েন করতে চেয়েছিলাম তখন যে খুব ম্যাচিওর ছিলাম তা নয়, একটা আবেগ কাজ করত। বড় হওয়ার পরও যে ভাবিনি তা নয়, কিন্তু পরে ফ্যামিলির পরিস্থিতি ম্যাটার করেছিল। আমি বুঝেছিলাম আমার দ্বারা চাকরিও হবে না, ব্যবসাও হবে না। তাই যেখানে দু’-তিন বছর থেকে আছি, যেখানে বড় হয়ে ওঠা আমার, সেই প্রফেশনেই থাকার সিদ্ধান্ত নিই। গ্র্যাজুয়েশনের পর মাকে বলেওছিলাম যে এম বি এ করব, কিন্তু তার আগে একবার বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে স্ট্রাগলটা করে নিই। যদি কিছু না হয় তো অন্য উপায় তো ভাবতেই হবে। কিন্তু থ্যাঙ্ক গড, আমি হেরে যাইনি।

পরিচালনায় আসার ইচ্ছে আছে?
না-না একদম নয়। পরিচালনা এতটাও সহজ কাজ নয়, আমি মনে করি একজন পরিচালকের ফিল্মের সমস্তটা নিয়ে জ্ঞান থাকা উচিত। সেই জ্ঞান আমার এখনও আসেনি।

প্রত্যেক অভিনেতার এমন একজন বা দুজন পরিচালক থাকে যাঁর সঙ্গে কাজ করে ভীষণ কমফর্টেবল ফিল হয়, আপনার লিস্টে এমন কেকে আছেন?
অনেকেই রয়েছেন এবং তাঁরা শুধু দাদা নয়, তাঁরা বন্ধু। যেমন প্রথমেই নাম নেব রাজ চক্রবর্তী, তারপর নাম নেব রাজা চন্দ, রাজীবদা… এই মানুষগুলোর সঙ্গে কাজ করে এত কমফর্টেবল লাগে, মনেই হয় না একজন পরিচালক একজন আর্টিস্টকে নির্দেশ দিচ্ছে। অনায়াসে আইডিয়ার এক্সচেঞ্জ করা যায় কাজের মধ্যে-মধ্যেই।

আপনারহরলিকস বয়সংলাপটা নিয়ে যে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে মিমগুলো হয়, দেখে কীরকম প্রতিক্রিয়া হয়?
হাসি পায়! সত্যি কথা বলতে কী পুরোটাই অঞ্জনজেঠুর ক্রেডিট। প্রথম ছবির ডায়লগ এভাবে ফেমাস হয়ে যাবে যে এতগুলো ছবি করার পরেও লোকে আমাকে অনুরোধ করে ‘মাস্টার বিট্টু’-র ওই ডায়লগটা বলতে, সেটা কিন্তু ত‌খন বুঝিনি। তবে আমি এখন আর ‘হরলিকস বয়’ নই, ‘কোকাকোলা’ খেয়ে নিয়েছি… (হাসি)।

বাংলা ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপনার কী বক্তব্য?
দেখুন প্রত্যেকটা ইন্ডাস্ট্রিরই একটা খারাপ ভাল দিক থাকে, বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা সত্যি কথা বলতে কী বেশ খারাপ! একের পর এক সিঙ্গল স্ক্রিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আর এটা শুধু কমার্শিয়াল ছবির ক্ষেত্রে নয়, প্যারালাল ছবির ক্ষেত্রেও। এমন অবস্থা কিন্তু নয় যে কোনও বিশেষ পরিচালকের ছবি মানেই কালেকশন হবে সবসময়! তাই কনটেন্টের উপর ভীষণ জোর দিতে হবে, মানুষ কী চাইছে তার উপরেও। এছাড়াও যদি মিনি নন্দনের মতো ব্যবস্থা করা যায়। যেখানে অল্প দামে ছবি দেখবে মা‌নুষ, তাহলেও ভাল।

সোহমের কোনও অজানা দিক রয়েছে কি?
সহঅভিনেতারা বলে আমি অসম্ভব রগচটা! (হাসি) যদিও এখন অনেক কমিয়ে ফেলেছি রাগটা।

দশবছর আগের সোহম এখনকার সোহমকে কী বলবে?
দশবছর আগের সোহমের জীবনে স্ট্রাগল ছিল, স্বীকৃতি পাওয়ার। এখনকার সোহমের জীবনে স্বীকৃতি এসেছে, তার সঙ্গে বেড়েছে দায়িত্ববোধ। তাই দশবছর আগের সোহম এখনকার সোহমকে বলবে, যা অ্যাচিভ করেছ তা মেনটেন করে যেতে পার যেন সেই চেষ্টাই কর।

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.